ডেঙ্গু বিষয়ক বিশেষ বার্তা

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায় । এই মশা সাধারনতঃ ভোরবেলা ও সন্ধায় কামড়ায় । বর্ষার সময় সাধারনত এ রোগের প্রকোপ বাড়ে । এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি রোধের মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করা যায় ।
১। ডেঙ্গু এডিস মশা বাহিত ভাইরাসজনিত একটি রোগ ।
২। এ রোগের প্রধান লক্ষন-জ্বর । অন্যান্য লক্ষনের মধ্যে রয়েছে- মাথা ব্যথা, শরীরে লালচে দানা, শরীরে ব্যথা, হাঁরে ব্যথা,চোখে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি ।
৩। জ্বর হলে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি বেশি বেশি তরল খাবার খাবেন । যেমন-স্যালাইন, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের রস, স্যুপ ইত্যাদি ।
৪। জ্বর হলে (অন্যান্য লক্ষন না থাকলেও ) অবশ্যই চিক্ৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করান ।
৫। ডেঙ্গু সনাক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন ।
৬। ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর সেরে যাওয়ার পরবর্তী সময় খুবই ভয়ংকর । এ সময় তীব্র পেট ব্যথা, বার বার বমি, পাতলা পায়খানা অথবা শরীরের যে কোন স্থান থেকে রক্তক্ষরন, রোগীর শরীর অনেক দুর্বল, হাঁটা-চলা করতে কষ্ট হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিবেন ।
৭। আপনার বাড়ির ফুলের টব, ফ্রিজে জমানো পানি, পরিত্যাক্ত টায়ার, ডাব/ নারিকেলের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল ও আশে পাশে পড়ে থাকা পাত্রে জমে থাকা পানি ৩ দিনের মধ্যে ফেরে দিন ।
৮। আপনার বাড়ির আঙ্গিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন; ডেঙ্গু মুক্ত থাকুন।
sunaid
আগাম বৃষ্টিতে চোখ রাঙাতে শুরু করেছে ডেঙ্গুজ্বর । চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গুর থাবায় প্র্রাণ হারিয়েছেন ২২ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭০৫ জন । গত বছর এ সময়ে আক্রান্ত হয়েছিল ৮৪৩ জন, মারা গিয়েছিলেন ৯ জন । গতবারের তুলনায় এর মধ্যেই দ্বিগুনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন । সার্বিক বিবেচনায় এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি গতবারের তুলনায় আরও খারাপ হতে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে বাড়তি ইনজেকশনযোগ্য স্যালাইন সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। গত বছর ইনজেকশনযোগ্য স্যালাইনের অভাবের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছিল। এ বছর যাতে ফের স্যালাইন সংকট না হয় সে জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সম্প্রতি এক বৈঠক করেছে। ওষুধটির স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারি হাসপাতালে ইনজেকশনযোগ্য স্যালাইনের মজুদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ বছর ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ঢাকার চেয়ে বেশি খারাপ হবে, কারণ গত বছর সারা দেশে এডিস মশা ছড়িয়ে গেছে। মিডিয়া ও বিশেষজ্ঞদের চাপে ঢাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ঢাকার বাইরে তো কিছুই করা হয় না। মশার বংশবিস্তারের উৎসে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। কারণ ডেঙ্গুতে মৃত্যৃর অন্যতম কারণ হলো দেরিতে চিকিৎসা শুরু করা । ঢাকার বাইরের রোগীরা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল ছোটাছুটি করতে গিয়ে বেশি খারাপ হয়ে যায়।
২০২০ সালে করোনা মহামারি আঘাত হানে । এ বছর আক্রান্ত কমে আসে । এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা । গত বছর দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের ২২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হন ও মারা যান। এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারি হবে বলে মনে হচ্ছে। ডেঙ্গু এখন আর শহরের রোগ নেই, সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। সবাই তো জানি এডিস শত্রু-মশা। তাই মশা নিধন করতে হবে,নিজেকে মশার কামর থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। ছাদে বারান্দায়, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা,মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট,অব্যবহৃত কমোড এগুলোতে পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
সংগ্রহীতঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *